পদত্যাগ করতে সম্মত হলেও আরও দুই মাস পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পরিকল্পনা করছেন বরিস জনসন। তবে তার দলের বেশিরভাগ সংসদ সদস্যই তাকে এখনই পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (৫ জুলাই) থেকে বরিসের মন্ত্রিসভার একের পর এক মন্ত্রী পদত্যাগ করছেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। ফলে বরিসের ওপর পদত্যাগের চাপ বাড়ছিল।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) দলীয় প্রধানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন বরিস। তবে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকবেন শরৎকাল পর্যন্ত। চলতি বছর যুক্তরাজ্যে শরতের শুরু ২৩ সেপ্টেম্বর। আর শেষ হবে ২১ ডিসেম্বর।
বৃহস্পতিবার কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বরিস। ব্রিটিশ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলীয় প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে আপাতত প্রধানমন্ত্রীত্ব রক্ষার শেষ ট্রামকার্ডটি খেলেছেন বরিস।
সান পত্রিকার রাজনৈতিক সম্পাদক হ্যারি কোল বলেন, আগামী গ্রীষ্মে নতুন নেতা নির্বাচিত হতে পারে। তার আগ পর্যন্ত আরও দুই মাস ক্ষমতায় আছেন বরিস।
ব্রেক্সিট (ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের প্রস্থান) ইস্যুকে কেন্দ্র করে পদত্যাগ করতে হয় যুক্তরাজ্যের সমকালীন ইতিহাসে কনজারভেটিভ পার্টির সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরুনকে। এরপর ক্ষমতায় আসেন থেরেসা মে।
এক বছর পর তাকেও সরে যেতে হয়। নিজ দলের হলেও এ দুই প্রধানমন্ত্রীর বিদায়ের নেপথ্যে বরিসই কলকাঠি নাড়েন- এমন অভিযোগ খোদ তার নিজ দলের ভেতরেই।
ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন করে ব্রিটেনকে রক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৯ সালের ২৪ শে জুলাই ক্ষমতায় আসেন বরিস। ব্রেক্সিট হলে ব্রিটেনের ভালো হবে-এমন আশায় তখন একচেটিয়া জনসমর্থন ছিল বরিসের দিকে। কিন্তু গত দুবছর ধরে নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দলের মধ্যে অনেকের আস্থা হারান তিনি।
করোনা মহামারির লকডাউনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিটে মদের পার্টিতে অংশ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েন বরিস জনসন।
বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি নিজ দলের মধ্য থেকেই পদত্যাগের দাবি ওঠে। মদের পার্টিতে যোগ দেয়ার জন্য একাধিক ক্ষমা প্রার্থনা করলেও ক্ষমতা ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান তিনি। ফলে শেষ পর্যন্ত সংসদে অনাস্থা ভোটের মুখে পড়েন তিনি। কিন্তু অনাস্থা ভোটে ভালোভাবেই উতরে যান বরিস।