কিয়েভে প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, বরিস জনসনের কনজারভেটিভ নেতা হিসেবে পদত্যাগ এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আসন্ন প্রস্থানের বিষয়ে কথা বলতে তাকে ফোন করেন জেলেনস্কি। এ সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে দুঃখ প্রকাশ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। খবর আল-জাজিরার।
এ সময় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা সবাই দুঃখের সাথে এই খবরকে স্বাগত জানাই। শুধু আমি নই, ইউক্রেনের সকলে আপনার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছে।
জেলেনস্কি এ সময়, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার পর থেকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সমর্থনের জন্য ইউক্রেনীয়রা তার প্রতি কতটা কৃতজ্ঞ ছিল তা পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বরিস জনসন। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করার পরিকল্পনা করছেন তিনি। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে চান তিনি।
নেতৃত্ব থেকে জনসনের সরে দাঁড়ানোর ঘোষণায় রাজনীতিবিদদের একেক জনের কাছ থেকে একেক রকম প্রতিক্রিয়া এসেছে। বিরোধীদল লেবার পার্টির নেতা কির স্টারমার জনসনের ঘোষণাকে দেশের জন্য সুসংবাদ বলেছেন। তবে এটি আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এদিকে কনজারভেটিভ দলের উপ চেয়ারম্যান জাস্টিন টমলিসন বলেছেন, ‘জনসনের পদত্যাগ অনিবার্য ছিল। এখন দল হিসাবে আমাদেরকে দ্রুত এক হয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে মনোনিবেশ করতে হবে।’
স্কটল্যান্ডের মন্ত্রী অ্যালিস্টার জ্যাক অবশ্য জনসনের সরে যাওয়া নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ব্রেক্সিটে জনসনের সফলতাসহ দেশের শক্তিমত্তা ধরে রাখতে তার অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রশংসা করেছেন তিনি।
বরিসের সরে যাওয়াকে আরও অনেকেই স্বস্তিদায়ক বলে অভিহিত করেছেন। তারা বলছেন, এখন রানির কাছে ক্ষমা চেয়ে জনসনের উচিত বিদায় নেওয়া এবং রানিকে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়োগ করতে দেওয়া, যাতে কনজারভেটিভ পার্টি ঠিকমত নতুন নেতা বেছে নিতে পারে।
ব্রিটিশ মন্ত্রিসভা থেকে একের পর এক মন্ত্রীর পদত্যাগের পর প্রবল চাপের মুখে পড়েন বরিস। দাবি ওঠে, প্রধানমন্ত্রী বরিসকেও এক্ষনি পদত্যাগ করতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমে কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ও এরপর প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বরিস।
ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত অনেক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ব্রিটেন। পাশাপাশি ইউক্রেনকে বিপুল সামরিক ও মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে দেশটি। শুধু তাই নয়, নৈতিক সমর্থনের অংশ হিসেবে দুই দুইবার কিয়েভ সফরেও গেছেন বরিস।