‘গ্যাংনাম স্টাইল’ গানটির প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছিল সংগীত অঙ্গনের বাইরেও। সত্যি বলতে কী, গ্যাংনাম স্টাইলের সাফল্যকে বিবেচনা করা হয় ‘কোরিয়ান ওয়েভ’ বা হ্যালিউ’-এর অন্যতম প্রধান অনুঘটক হিসেবে। ১৯৯০-এর দশক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার সংগীত ও মিডিয়ার মাধ্যমে যে কাজটি করার চেষ্টা করছিল, সেই কাজটিই গ্যাংনাম স্টাইল করে দেয়।
২০১২ সাল। সে সময় কোরিয়ান গান দেশে দেশে কতটা জনপ্রিয় ছিল তা সঠিক জানা না থাকলেও বিশ্ব সংগীত জগতে সে সময় নাড়া দিয়েছিলেন একজন। ‘ওপ্পা গ্যাংনাম স্টাইল’ এই গানে ছোট্ট শরীরে অদ্ভুত নাচের ভঙ্গিমা দিয়ে বিশ্বকে জয় করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্পী সাঁই। প্রকাশের পরপরই হাওয়ার বেগে ভাইরাল হয়ে যায় ‘গ্যাংনাম স্টাইল’। ঝড় বইয়ে দেয় দুনিয়াজুড়ে। গানটির মিউজিক ভিডিওতে সয়লাব হয়ে যায় ফেসবুক টাইমলাইন। সর্বত্র যেকোনো সময়, যেকোনো উপলক্ষে বেজে ওঠে ‘গ্যাংনাম স্টাইল’।
২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে বিলবোর্ড হট ১০০-এ উঠে আসে গানটি। দু-সপ্তাহ পর উঠে যায় ২ নম্বরে। ইউটিউবে প্রথম ১০০ কোটি ভিউ পাওয়া ভিডিও এই গান। সাই আগে থেকেই নিজের দেশে জনপ্রিয় থাকলেও দেশের বাইরে তার পরিচিতি ছিলেন না। কিন্তু গ্যাংনাম স্টাইলের পর হুট করেই বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত গায়ক হয়ে ওঠেন। এক বছরের মধ্যে তিন-তিনটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড ভাঙেন সাঁই। নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে পারফর্ম করেন, ম্যাডোনার সঙ্গে। অকল্পনীয় সাফল্য ধরা দেয় সিউলের এই গায়কের হাতের মুঠোয়। ওই সময় তার বস ৩৫।
গ্যাংনাম স্টাইল গানটির প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছিল সংগীত অঙ্গনের বাইরেও। সত্যি বলতে কী, গ্যাংনাম স্টাইলের সাফল্যকে বিবেচনা করা হয় ‘কোরিয়ান ওয়েভ’ বা হ্যালিউ’-এর অন্যতম প্রধান অনুঘটক হিসাবে। ১৯৯০-এর দশক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার সংগীত ও মিডিয়ার মাধ্যমে যে কাজটি করার চেষ্টা করছিল, সেই কাজটিই গ্যাংনাম স্টাইল করে দেয়। জর্জ মেসন ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ কোরিয়ান ক্যাম্পাসের কালচারাল স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক গিউ ট্যাগ লির মতে, গ্যাংনাম স্টাইলই পূর্ব এশিয়ার বাইরে কোরিয়ান পপ সংস্কৃতিকে মূলধারার স্বীকৃতি এনে দিয়েছে।
গ্যাংনাম স্টাইল বের হওয়ার পরের এক দশকে দক্ষিণ কোরিয়ান প্রতিভা বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা ও মুগ্ধতার নতুন স্তরে পৌঁছে গেছে। গ্যাংনাম স্টাইলের ১০ বছর, এক হিট গান কোরিয়ান সংস্কৃতিকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিয়েছে। এই গানের পরই বিশ্ব খুঁজে পেয়েছে কোরিয়ান প্রতিভাবানদের।
সূত্র: এনবিসি