এক মাসের ব্যবধানে দুবার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। তবু চিনির দামে লাগাম টানতে পারছে না সরকার। এক সপ্তাহ আগে খোলা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম সমান (প্রতি কেজি ৯৫ টাকা) হয়ে গিয়েছিল। এখন খোলা চিনি আরও ৫ টাকা বেশি, কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে খোলা চিনির সরবরাহ কম। আর প্যাকেটজাত চিনি সবখানে মেলেও না।
সরকার নির্ধারিত নতুন দাম অনুযায়ী, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি ৯০ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির দাম ৯৫ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। তবে বাজার পরিস্থিতি ভিন্ন। এর আগে আরও একবার চিনির দাম বেঁধে দেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি।
রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে গতকাল বৃহস্পতিবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাজারে এখন খোলা চিনি প্রতি কেজি ১০০ টাকার নিচে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না। পাইকারিতে যাঁরা এই চিনি বস্তা ধরে কিনছেন, তাঁরাও ৫০ কেজির বস্তা কিনছেন ৪ হাজার ৯০০ টাকার ওপরে। সামান্য লাভ রেখে কেজি ১০০ টাকার ওপরে তা বিক্রি হচ্ছে। তবে খোলা চিনির সরবরাহ কম বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
মৌলভীবাজারের পাইকারি এক চিনি ব্যবসায়ী বলেন, ‘মিল (রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান) থেকে আমাদের চাহিদা অনুযায়ী চিনি দেওয়া হচ্ছে না। আর দামও রাখা হচ্ছে বেশি। তাতে সরকার নির্ধারিত দামে কোনোভাবেই চিনি বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ জন্য চিনির বিক্রিই বন্ধ রেখেছি।’
তবে মিল থেকে চিনি সরবরাহ ঠিক আছে বলে জানিয়েছেন মেঘনা গ্রুপের জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক এস এম মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘মিল থেকে খোলা চিনি সরবরাহ বন্ধ করা হয়নি। আর প্যাকেটজাত চিনির বিক্রি খুব বেশি নয়। তবে কয়েক মাস ধরে চিনির দাম বাড়তি। এখন সরকার নির্ধারিত দামে চিনি বিক্রি হচ্ছে।’
এদিকে বাজারে প্যাকেটজাত চিনির সরকার নির্ধারিত দাম প্রতি কেজি ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কারণ, প্যাকেটজাত চিনির দাম রাতারাতি বাড়ানো সম্ভব নয়। এই সুযোগে অনেকে প্যাকেট চিনি ভেঙে আধা কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি করছেন।
অন্যদিকে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে চালের দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তাতে পাইজাম কেজি প্রতি ৫৪-৫৬, বিআর ২৮ ৫৮-৬০, মিনিকেট ৭০-৭৫, নাজির ৭৫-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এক সপ্তাহ আগে পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা বেড়ে ৫০-৫৫ টাকা হয়েছিল। দাম এখনো কমেনি। মোটা মসুর ডাল বিক্রি কেজি প্রতি ১০০-১০৫, আর সরু দানার মসুর ডাল কেজি প্রতি ১৩০-১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন রাখা হচ্ছে ১৭৮ টাকা।
বাজারে মাঝারি আকারের রুই মাছ কেজি প্রতি ৩০০-৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের কাতলা মাছ কেজি প্রতি ৩০০-৩৫০ টাকা। পাঙাশ ও তেলাপিয়া কেজি প্রতি ২০০ টাকার কাছাকাছি বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস কেজি প্রতি ৬৮০-৭০০, খাসির মাংস ৯৫০-১০০০, ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ ও সোনালি মুরগি ৩০০-৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে কেজি প্রতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫, বেগুন ৮০-৯০, টমেটো ১২০-১৪০, গাজর ১০০-১২০, শিম ১১০-১২০, ঢ্যাঁড়স ও কচুর মুখী ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। করলা, মুলা, ধুন্দুল, বরবটি রাখা হচ্ছে কেজি প্রতি ৬০-৭০ টাকা।